ঢাকা,বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

পুলিশের তাড়া খেয়ে জুয়ার আসর থেকে পালাতে গিয়ে মাতামুহুরী নদীতে মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া:

চকরিয়ায় উপজেলার শাহারবিল ইউনিয়নের মাইজঘোনাস্থ মাতামুহুরীর চরে বাটাখালী ব্রীজের দক্ষিণ এলাকায় আরমানের   নিয়ন্ত্রনাধীন জুয়ার আসর থেকে পুলিশের তাড়া খেয়ে দৌড়ে পালানোর সময় মাতামুহুরী নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মো.মহিউদ্দিন (৪৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

চকরিয়া থানা পুলিশ আজ ৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে জনতার সহয়তায় মাতামুহুরী নদী থেকে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করেছে। নিহত মহিউদ্দিন চকরিয়া পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডের কসাইপাড়া এলাকার মাংস ব্যবসায়ী ওমর আলীর পুত্র বলে জানা গেছে।

চকরিয়া থানা পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার শাহারবিল ইউনিয়নের মাইজঘোনাস্থ বাটাখালী ব্রীজের দক্ষিণ পাশে মাতামুহুরী নদী লাগোয়া এলাকায় এনাম মেম্বারের ছোট ভাই আরমানের নিয়ন্ত্রনাধীন দীর্ঘদিন ধরে জুয়ার আসর চালিয়ে আসছিল। প্রতিদিনের ন্যায় গতকাল বুধবার বিকাল ২টার দিকে জুয়ার আসর বসার গোপন সংবাদ পেয়ে থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর নির্দেশে এস আই এনামুল হক ও সুকান্ত চৌধুরীর নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশের একটি দল ধাওয়া করলে বেশ ক’জন জুয়াড়ীরা পালিয়ে যায় এবং তিনজন জুয়াড়িকে জুয়ার আসার থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ  থানায় নিয়ে যায়।

চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের মাইজঘোনা এনাম মেম্বারের খামার বাড়ীতে প্রতিদিন জুয়ার আসর বসে। চকরিয়ার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও মহেশখালী, লামা, আলীকদম থেকে পেশাদার দাগী আসামীরা এ জুয়ার আসরে এসে জুয়া খেলে। এতে করে এলাকার সামাজিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে।

পুলিশ চলে যাওয়ার পর বিকাল ৪টার দিকে একই এলাকায় আরমান গ্রুপের জুয়াড়িরা পুন:রায় জুয়া খেলতে বসে। হঠাৎ জুয়া খেলার সময় সেলিম গ্রুপের লোকজন এসে পুলিশ আসছে বলে চিৎকার করলে ভয়ে আরমান গ্রুপের দুইজন জুয়াড়ি জাহাঙ্গীর ও মহিউদ্দিন পালাতে গিয়ে মাতামুহুরী নদীতে ঝাঁপ দেয়। দু’জন থেকে জাহাঙ্গীর সাঁতার কাটিয়ে কোন রকম বাড়ী ফিরলেও কসাইপাড়ার মহিউদ্দিন পানির মধ্যে ডুবে যায়। এসময় মহিউদ্দিনকে রাত্রে জাল পেলে অনেক খোঁজাখুজি করেও পাওয়া যায়নি। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে তার মরদেহ নদীতে ভেসে উঠলে স্থানীয় জনতা পুলিশকে খবর দেয়। চকরিয়া থানার এস আই আবদুল খালেক ঘটনাস্থলে পৌছে জনতার সহয়তায় মহিউদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় ৪ জোয়াড়ীকে আটক করেছে পুলিশ।

আটক ব্যক্তিরা হচ্ছে, মোহাং আল মামুন (৩৮) পিতা মৃত জয়নাল আবদীনলামার মুখ, লামা পৌরসভা।সালাহ উদ্দিন(৩০) পিতা শের আলী, সাং চিরিংগা সোসাইটি পাড়া।মোহাং মহিন(২৮) পিতা আব্দু শুক্কুর সাং কাহারিয়া ঘোনা ৫ নং ওয়ার্ড, চকরিয়া এবং মোহাং সেলিম পিতা আনোয়ার হোছন সাং তরছঘাটা, ৩নং ওয়ার্ড চকরিয়া পৌরসভা।

চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) বকতিয়ার উদ্দীন চৌধুরী, ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান,উদ্ধারের সময় লাশের মুটিতে ও কোমরের কাপড়ে পেঁচানা অবস্থায় সাড়ে ৪১ হাজার টাকা পেয়েছে পুলিশ। আটক ৪ জনের মধ্যে প্রথম তিনজনের বিরোদ্ধে জুয়ার আইনের ১১ ধারায় মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেলিম থানা হাজতে রয়েছে।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মাতামুহুরী নদী থেকে উদ্ধার হওয়া মরদেহ মহিউদ্দিনের প্রাথমিক ছুরুতহাল রির্পোট তৈরি করা হয়েছে।  তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতার মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের কাজ থেকে অভিযোগ দেয়া হলে তা পরবর্তীতে আইনগত ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

পাঠকের মতামত: